আমের ঔষুধি গুনাগুন কি কি
আম পাতার বিভিন্ন কার্যকরি ঔষুধি গুনাগুন
mangoes
আমরা জানি আম একটি অতি সুস্বাদু ফল, যাকে আমরা ফলের রাজা হিসাবে চিনি। আপনি কি জানেন আম স্বাস্থ্যের জন্য কত উপকারী এবং আমের পাতা মানুষের শরীরের জন্য কতটা উষধী গুনে ভরপুর ? আমের পাতার বিভিন্ন ঔষুধি গুনাগুন এবং কিভাবে তা স্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহার করবেন এই নিয়ে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে।আমের mango food |
আমের বিভিন্ন উপকারিতা গুলি :
রক্তচাপ কমাতে :
রক্তচাপ কমাতে আমের পাতার চা বানিয়ে রোজ সকালে খান। আম পাতায় রয়েছে হাইপোটেনসিভ নামক পদার্থ, যা উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়া আম পাতার রস আমাদের দেহের রক্তনালির সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে এবং আরো শক্তিশালী করে তোলে। আম পাতার চা আমাদের স্নায়ুতন্তের উপর এমন প্রভাব ফেলে যে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শরীরের রক্ত প্রবাহকে সুষ্ঠ ভাবে চলতে সাহার্য্য করে থাকে।
কিডনিতে পাথর জমলে :
যদি আপনার কিডনিতে পাথর জমে থাকে, তাহলে রোজ সকালে এক গ্লাস জলের সাথে শুকনো আম পাতার গুঁড়ো এক থেকে দু চামচ করে নিয়ে মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। এর ফল হিসাবে কিডনিতে থাকা পাথরগুলিকে ভাঙতে সাহার্য্য করে এবং পাথর হওয়া থেকে রোধ করে।
ডায়াবেটিকস রোগে :
যাদের ডায়াবেটিকস রয়েছে তারা কচি আম পাতার চা খেতে পারেন । কারণ কচি আম পাতায় রয়েছে ট্যানিন , যা ইন্সুলিন ও গ্লুকোজের মাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের শর্করা স্বাভাবিক ভাবে বজায় রাখে।
ব্যাথা যন্ত্রনায় :
আম পাতা দেহের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া থেকে রক্ষা করে। যেমন ভিবিরিও, কলেরা , স্ট্যাফিলোককাস আলবাস, ব্যাসিলাস সাবটিলিস প্রভৃতি নষ্ট করে দেয়।আম পাতায় থাকা পলিফেনল দেহের ব্যাথা যন্ত্রনা থেকে শরীরকে নিরাময় করে।শরীরের ফুলে গেলে এবং কানের ব্যাথা থেকে মুক্তি দিতে অনেকটা সহায়তা করে। কানের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে গাছ থেকে তাৎক্ষণিক ছেঁড়া আম পাতার রস হালকা গরম করে নিয়ে কানে দিন।এতে শুধু কানের যন্ত্রনাই নয় কান পরিষ্কার করতেও সাহার্য্য করে। গলা ব্যাথা করলে শুকনো আম পাতা পুড়ে কিছুটা ধোঁয়ায় স্বাস নিলে গলা ব্যাথা থেকে নিরাময় করে।হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট থাকলে :
যারা হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা লাগা, ব্রঙ্কাইটিসে ভুগছেন তারা জল ও মধুর সাথে আম পাতার রস মিশিয়ে খান। এতে আপনার স্বাস কষ্ট জনিত সমস্যা, কাশি দূর করে কারণ আম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
ভাইরাস প্রতিরোধে :
আমের পাতার চায়ে আন্টি ভাইরাল, যা এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়া থেকে রোধ করতে পারে। ভাইরাস প্রতিরোধে যেমন এইচএসভি ১, এইচএস ভি ২ ভাইরাস গুলির ছড়িয়ে পড়া থেকে কম করতে পারে।টুথপেস্ট হিসাবে আম পাতা :
যদি আপনার দাঁতের মারি থেকে রক্তপাত হয় তাহলে আপনি আমের পাতা টুথপেস্ট হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ আম পাতার ক্লোসাহার্য্য করে রোফিল দাঁতে আটকে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং দাঁতকে মজবুত করতে পারে।ডায়রিয়া প্রতিকারে :
পেটের গোলযোগ যেমন ডায়রিয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আমের পাতার চা সেবন করুন। কারণ এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি পেটের জমে থাকা গ্যাস অল্ম ও পেটের ফোলা ফোলা ভাব কমাতে সহায়তা করে এবং হজম পদ্ধতিতে টনিকের মতো কাজ করে।এলাৰ্জি নাশক হিসাবে :
এলাৰ্জি জনিত রোগ যেমন জ্বর, ত্বকের চুলকানি, ত্বকে লালচে ছোপ ছোপ ভাব এসব প্রতিক্রিয়ায় আম গাছের ছাল, পাতা ও কান্ড এলাৰ্জি হ্রাস করতে সহায়তা করে।ভিটামিন :
কচি আম পাতাগুলিতে রয়েছে ভিটামিন বি, সি, বিটা ক্যারোটিন। এই ভিটামিন গুলি ফ্লেভোনয়েডস, পলিফেনলস ও যৌগিক উপাদানের সমৃদ্ধ থাকায় বিভিন্ন ঔষুধি গুন্ পাওয়া যায়।ওজন কমাতে :
আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চান তাহলে এক থেকে দু সপ্তাহ আম পাতার চা পান করে যান এবং সেই সাথে চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন।চুল বৃদ্ধিতে :
আম গাছের পাতাগুলি আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল, যেটা মাথার ত্বক ও চুলের ফলিক পরিষ্কার করে এবং চুলকে শক্তি যোগায় যা চুল ভাঙা বা চুল পড়া থেকে রোধ করে।এছাড়া রক্তের শিরাগুলিতে রক্তের প্রবাহকে উন্নত করে, ইমিউনিটি বাড়াতে কাজ করে।
মনে রাখবেন বাড়িতে ভেষজ ঔষুধ বানানোর আগে ডাক্তারদের পরামর্শ নিবেন এবং আপনার শারীরিক অসুস্থতা অনুযায়ী ভেষজ ঔষধ বানাবেন।
কোন মন্তব্য নেই